অনুচ্ছেদ: রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা
রোহিঙ্গা হচ্ছে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মাসে মায়ানমার সামরিক বাহিনী কর্তৃক নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পালিয়ে বাংলাদেশে আসা একদল শরনার্থী বা উদ্ভাস্তুদের বোঝানো হয়েছে। ডিসেম্বর ২০১৭ সালের হিসাব অনুযায়ী মায়ানমার হতে আনুমানিক ৬ লক্ষ ৫৫ হাজার হতে ৭ লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এছাড়াও মায়ানমার সরকারের সহিংস নির্যাতন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বিগত তিন দশক ধরে প্রায় তিন লক্ষেরও উপরে রোহিঙ্গা শরণার্থী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উপায়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে কক্সবাজারে প্রায় ২২ লক্ষেরও অধিক রোহিঙ্গা শরণার্থী অবস্থান করছে।
প্রিয় শিক্ষার্থী বন্দুরা, আজ আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো bangla paragraph বা অনুচ্ছেদ রোহিঙ্গা শরনার্থী সমস্যা সম্পর্কে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক-
![]() |
অনুচ্ছেদ: রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা |
রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা (Rohingya refugee problems)
রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা বর্তমানে শুধু বাংলাদেশে নয় বরং বিশ্বব্যাপী আলোচিত বিষয়। মায়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বরতা ও নিষ্ঠুরতা এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বরতাকেও অতিক্রম করেছে। রোহিঙ্গা জনগণের বর্বরপূর্ণ অন্যায় কাজ বিশ্বের মানুষের জন্য এক বিরাট উদ্বেগের কারণ হয়েছে। মায়ানমারের সেনাবাহিনী অসংখ্য রোহিঙ্গা জনগণকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে এবং তারা তাদের বাড়িঘরে আগুন দিয়ে ধ্বংস করেছে। সেনাবাহিনী নিরপরাধ রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিশাল ত্রাস সৃষ্টি করেছে। সেনাবাহিনী তাদের জীবন রক্ষা করতে রোহিঙ্গা জনগণ আমাদের দেশে আসতে শুরু করে। মায়ানমার হলো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী দেশ। এখানকার অধিকাংশ লোক বৌদ্ধ। তারা হলো ধর্মীয়ভাবে গোঁড়া। তারা প্রচণ্ডভাবে মুসলমানদের ঘৃণা করে। তাই তারা সম্পূর্ণ রোহিঙ্গা জনগণকে নিশ্চিহ্ন করতে বদ্ধ পরিকর। অং সান সুচির নির্দেশানুসারে মায়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর ও তার অনুগত আর্মি জেনারেল মিন অং হায়াং নিরপরাধ রোহিঙ্গা জনগণকে হত্যা, জবাই ও অগ্নি সংযোগ করেছে। তাদের দাবি যে রোহিঙ্গারা হলো সন্ত্রাসী। কিন্তু এটি হলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তাদের প্রমাণ করার মতো কোনো তথ্য প্রমাণাদি নেই। বরং তারা নীরবে মায়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচারে সয়ে যাচ্ছে। বরং মায়ানমার সেনাবাহিনী হত্যা ও সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছে। তারাই প্রকৃতপক্ষে সন্ত্রাসী। তারা লোক হত্যা ও রাখাইন জনগণের ঘরবাড়ি ধ্বংস করে আনন্দ পাচ্ছে। তারা সম্পূর্ণরূপে মনুষ্যত্বহীন। তাদের অন্তরে সামান্যতম দয়া মায়া নেই। তারা বলে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশি, মায়ানমারের নন। এটা বলে তারা নিজেদেরকে নির্বোধ ও মিথ্যুক বলে প্রমাণ করেছেন। রোহিঙ্গা মুসলমানগণ শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মায়ানমারে বসবাস করে আসছে এবং মায়ানমার সেনাবাহিনী কর্তৃক রাখাইন মুসলমানদের প্রতি বৈষম্য এক নতুন ঘটনা নয় এবং এটি দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসছে। কিন্তু বর্তমানে একটি ভয়াবহ অবস্থা ধারণ করেছে। যাইহোক, এই বিশাল সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশের ন্যায় একটি ছোট উন্নয়নশীল দেশের জন্য একটি বাড়তি বিশাল বোঝা। বাংলাদেশ সম্প্রতি একটি ভয়ংকর বন্যা দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। এরই ওপর এই বাড়তি চাপ বাংলাদেশের জন্য সহ্য করা অধিক কষ্টকর। এমনকি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন বিশাল মানবতাবাদীর ন্যায় তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছেন এবং তাদেরকে খাদ্য, ঔষধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে সহায়তা করে যাচ্ছেন। তিনি ধর্মীয় গণহত্যা বন্ধ ও রোহিঙ্গাদের মায়ানমারের ফিরিয়ে নিতে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। বাংলাদের বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা ডঃ ইউনুস রোহিঙ্গাদেরকে তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মহলে কথা বলেছেন এবং ডঃ ইউনুস বলেছেন এটা আশা করা যাচ্ছে যে, আমরা খুব শীঘ্রই এ বিশাল সমস্যার সমাধান পাবো।
আরও পড়ুনঃ
১. অনুচ্ছেদ: শিশুদের জন্য মা-বাবার যত্ন
২. অনুচ্ছেদ: দুর্নীতি
৩. অনুচ্ছেদ: দুর্নীতি দমনের উপায়
৪. অনুচ্ছেদ: ছাত্র রাজনীতি
৫. অনুচ্ছেদ: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
৬. অনুচ্ছেদ: যৌতুক প্রথা
৭. অনুচ্ছেদ: ইভ-টিজিং
৮. অনুচ্ছেদ: বৃক্ষরোপণ
৯. অনুচ্ছেদ: শিশুশ্রম
FAQ:
রোহিঙ্গা শরনার্থী কি?রোহিঙ্গা শরনার্থী কারা?রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা কি? বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা কেন হয়েছে? রোহিঙ্গা শরনার্থী সমস্যা হতে উত্তরনের উপায় কি? রোহিঙ্গা সমস্যা কিভাবে সমাধান করা যায়? রোহিঙ্গারা কি আদো নিজ দেশে ফিরে যাবে? রোহিঙ্গাদেরকে কেন মায়ানমার হতে বের করে দেওয়া হয়েছে?